শ্রীনগর, ২৯ এপ্রিল ২০২৫: জম্মু ও কাশ্মীরের পাহালগামে গত ২২ এপ্রিল ২৬ জন পর্যটকের প্রাণহানির ঘটনায় সন্ত্রাসী হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে জম্মু ও কাশ্মীর বিধানসভায় একটি প্রস্তাব পাস করা হয়েছে। এই প্রস্তাবে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই করার এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষার উপর জোর দেওয়া হয়েছে। বিধানসভার এই অধিবেশনে সিপিআই(এম) নেতা মোহাম্মদ ইউসুফ তারিগামি পাহালগামের শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
গ্রেটার কাশ্মীরের প্রকাশিত একটি ছবিতে দেখা গেছে, সবুজ কার্পেটে ঘেরা বিধানসভার কক্ষে তারিগামি শ্রদ্ধা নিবেদনের সময় অন্যান্য বিধায়করা নীরবতা পালন করছেন। এই হামলাকে কাশ্মীরে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও উন্নয়নের পথে একটি "চক্রান্তমূলক নকশা" হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। বিধানসভার প্রস্তাবে বলা হয়, কাশ্মীরের কুপওয়ারা থেকে জম্মুর কাঠুয়া পর্যন্ত জনগণ এই হামলার বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে, যা সন্ত্রাসবাদের অবসানের সূচনা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ বলেন, “আমরা একজন সন্ত্রাসীর হাতে বন্দুক নিয়ন্ত্রণ করতে পারি না, কিন্তু জনগণ আমাদের সঙ্গে থাকলে সন্ত্রাসবাদের অবসান ঘটাতে পারি। সেই সময় এসেছে।” তিনি উল্লেখ করেন, মসজিদগুলোতে দুই মিনিটের নীরবতা পালন করা হয়েছে, যা জনগণের শান্তি ও সম্প্রীতির প্রতি অঙ্গীকারের প্রতিফলন।পাহালগাম হামলায় নিহতদের মধ্যে তিনজন পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা ছিলেন—কলকাতার পাটুলির বিটন অধিকারী, বেহালার সমীর গুহ এবং পুরুলিয়ার ঝালদার মণীশ রঞ্জন। রাজ্য সরকার তাদের পরিবারের জন্য ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছে। এদিকে, হামলার পর ভারত সরকার পাকিস্তানের ১৬টি ইউটিউব চ্যানেল নিষিদ্ধ করেছে, যার মধ্যে রয়েছে ডন নিউজ, সমা টিভি, এআরওয়াই নিউজ এবং জিও নিউজ। এই চ্যানেলগুলো হামলার পর ভারত, ভারতীয় সেনাবাহিনী এবং নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে মিথ্যা ও উস্কানিমূলক প্রচারণা চালাচ্ছিল বলে অভিযোগ।
তারিগামি, যিনি কুলগাম থেকে ১৯৯৬ সাল থেকে পাঁচবার বিধায়ক নির্বাচিত হয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরে কাশ্মীরে কৃষকদের অধিকারের জন্য সংগ্রাম করে আসছেন। ২০১৯ সালে আর্টিকেল ৩৭০ বাতিলের পর তিনি পিপলস অ্যালায়েন্স ফর গুপকার ডিক্লারেশনের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। এই ঘটনার পর তিনি বলেন, “এই হামলা কেবল জম্মু ও কাশ্মীর নয়, গোটা ভারতের শান্তি ও সম্প্রীতির বিরুদ্ধে আঘাত। আমাদের ঐক্যই এর উত্তর হবে।”