কসবা কান্ড: তদন্তভার থেকে সরানো হলো সাব-ইন্সপেক্টর রিটন দাসকে
গত বুধবার কসবার ডিআই অফিসে ঘটে যাওয়া একটি অমানবিক ঘটনার জেরে কসবা থানার সাব-ইন্সপেক্টর রিটন দাসকে তদন্তভার থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, রিটন দাস এক চাকরিহারাকে লাথি মারছেন। এই ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়তেই নিন্দার ঝড় ওঠে সর্বত্র। বিষয়টি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠে, যা পুলিশ প্রশাসনকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে বাধ্য করে।
ঘটনার সূত্রপাত
কসবার ডিআই অফিসে গত বুধবার এক উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়, যেখানে চাকরিহারা এক ব্যক্তি ডিআই অফিসের সামনের ব্যারিকেড পেরিয়ে প্রবেশ করেন। সেই সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য স্থানীয় থানার সাব-ইন্সপেক্টর রিটন দাস কর্তব্যরত ছিলেন। অভিযোগ, ওই ব্যক্তিকে নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে রিটন দাস শারীরিক আঘাত করেন, যা এক প্রত্যক্ষদর্শীর মোবাইল ফোনে রেকর্ড হয়।
তদন্ত ও পদক্ষেপ
এই ঘটনার পরপরই ভিডিওটি ভাইরাল হয়ে যায় এবং পুলিশ প্রশাসনের উচ্চস্তর পর্যন্ত পৌঁছায়। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, কসবার ডিআইএ দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে এই মামলার তদন্তভার প্রথমে রিটন দাসকে দেওয়া হয়েছিল। তবে, ভিডিওটি প্রকাশ্যে আসার পরেই তার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।
পুলিশের এক সিনিয়র আধিকারিক জানান, "এই ধরনের আচরণ পুলিশ বিভাগের নীতিবিরুদ্ধ। জনসাধারণের প্রতি পুলিশ কর্মকর্তাদের মানবিক আচরণ করা উচিত। এ কারণে রিটন দাসকে তদন্তভার থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।"
তদন্তভার এখন কসবা থানার আরেক সাব-ইন্সপেক্টর সঞ্জয় সিংহকে দেওয়া হয়েছে। সঞ্জয় সিংহ ইতিমধ্যেই দায়িত্বভার গ্রহণ করেছেন এবং নিরপেক্ষ তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন।
সামাজিক প্রতিক্রিয়া
ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই সাধারণ মানুষের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। বিভিন্ন মহল থেকে পুলিশের এই আচরণের তীব্র নিন্দা করা হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় বহু মানুষ এই ঘটনাকে অমানবিক এবং ন্যায় বিচারের পরিপন্থী বলে অভিহিত করেছেন।
আলোচনার বিষয়
এই ঘটনা শুধু একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, বরং পুলিশের মানবিক দায়িত্বের উপর বড় প্রশ্নচিহ্ন এঁকে দিয়েছে। এটি আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর আচরণ ও দায়িত্ব পালনের পদ্ধতি নিয়ে নতুন করে আলোচনার দরজা খুলেছে।
কসবার এই ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের জন্য প্রশাসনের দিক থেকে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়, তা এখন দেখার বিষয়।