মমতার বক্তব্যে দ্বিধাগ্রস্ত রাজ্যবাসী, দাঙ্গার ঘটনায় দায়িত্ব এড়ানোর অভিযোগ
কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গের সাম্প্রতিক অশান্তির ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভূমিকা ও বক্তব্য নিয়ে চরম সমালোচনা চলছে। বিরোধীদের দাবি, তিনি রাজনৈতিক দোষারোপে ব্যস্ত থাকলেও, আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় তার সরকারের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ। নাগরিকদের একাংশ মনে করছেন, মমতার বক্তব্য সমস্যার স্পষ্ট সমাধানের পরিবর্তে আরও বিভ্রান্তি তৈরি করছে।
“কংগ্রেসের শক্ত ঘাঁটিতে অশান্তি” বলে দায় এড়ানোর চেষ্টা?
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কংগ্রেসের দিকে আঙুল তুলে বলেন,
“যেখানে গণ্ডগোল হয়েছে, সেটা মুর্শিদাবাদ আসন নয়, মালদহের মতো এলাকা। কংগ্রেসের শক্ত ঘাঁটিতে এই অশান্তি ছড়ানো হয়েছে।”
তবে বিরোধীদের অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রী কেবল বিরোধীদের দোষারোপ করে তার প্রশাসনিক দায়িত্ব এড়ানোর চেষ্টা করছেন।
নাগরিকদের মধ্যে বিভ্রান্তি
সাধারণ মানুষের একাংশ প্রশ্ন তুলছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় রাজ্য সরকারের কি ভূমিকা ছিল? এক নাগরিকের মতে,
“মুখ্যমন্ত্রী যতই বলুন কংগ্রেস দাঙ্গা বাধিয়েছে, শেষ পর্যন্ত শৃঙ্খলা বজায় রাখা তো রাজ্যের কাজ। তাতে কেন এত ব্যর্থতা?”
বিরোধীদের আক্রমণ
বিজেপি ও কংগ্রেস উভয়েই মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ করে বলেছে,
“মমতা শুধু রাজনৈতিক ফায়দার জন্য বিরোধীদের দোষ দিচ্ছেন। কিন্তু তার প্রশাসন হিংসা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ। মানুষ বিভ্রান্ত এবং অসহায়।”
কংগ্রেস নেতা প্রশ্ন তুলেছেন,
“যদি কংগ্রেসের শক্ত ঘাঁটি হয়েও এই এলাকায় অশান্তি হয়, তাহলে রাজ্য সরকারের প্রশাসনিক দক্ষতা কোথায়?”
পুলিশ প্রশাসন ও রাজনীতির সমালোচনা
বিরোধীদের মতে, হিংসা দমনে পুলিশের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ। বিজেপি নেতা বলেন,
“পুলিশ কেবল দর্শকের ভূমিকা পালন করেছে। প্রশাসন জানত পরিস্থিতি খারাপ হবে, তবুও সময়মতো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।”
ধর্মনিরপেক্ষতা ও শান্তি বজায় রাখার প্রতিশ্রুতি
মমতা তার বক্তব্যে বাংলার ঐতিহ্যের কথা উল্লেখ করে বলেন,
“বাংলা কখনও হিংসার রাজনীতি সমর্থন করেনি। ধর্মনিরপেক্ষতা ও শান্তি বজায় রাখতে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।”
তবে তার এই প্রতিশ্রুতি বাস্তবে কতটা কার্যকর হবে, তা নিয়ে সাধারণ মানুষের মনে সংশয় রয়েছে।
উত্তেজনার মধ্যে ভবিষ্যতের দিকনির্দেশনা
রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় উত্তেজনা প্রশমনে সরকারের আরও কার্যকর পদক্ষেপ প্রয়োজন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। মমতার শান্তি বজায় রাখার আহ্বান সত্ত্বেও, তার প্রশাসনের ভূমিকা ও দিকনির্দেশনা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন নাগরিকরা।