জম্মু-কাশ্মীরে পাহাড়গাম হামলার পর ওমর আবদুল্লাহর বক্তৃতা: "রাজ্যের মর্যাদার দাবি করব না এই সুযোগে"
শ্রীনগর, ২৮ এপ্রিল ২০২৫: জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ আজ বিধানসভার একটি বিশেষ অধিবেশনে পেহেলগামে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলার পর তাঁর অবস্থান স্পষ্ট করেছেন। তিনি বলেন, "আমি এই পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে কেন্দ্রের কাছে রাজ্যের মর্যাদার দাবি করব না। আমার রাজনীতি কি এত সস্তা? আমি যদি এই বলে কেন্দ্রের কাছে যাই যে ২৬ জন মারা গেছে, এখন আমাকে রাজ্যের মর্যাদা দিন, তাহলে আমার উপর ধিক্কার হোক।"
গত ২৩ এপ্রিল পেহেলগমের বৈসরণ উপত্যকায় একটি ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হন। সন্ত্রাসীরা স্বয়ংক্রিয় রাইফেল এবং ছোট অস্ত্র ব্যবহার করে এই হামলা চালায়, যা পর্যটনের জন্য বিখ্যাত এই অঞ্চলের শান্তি ও সমৃদ্ধিতে বড় ধাক্কা হিসেবে দেখা হচ্ছে। হামলার পর পর্যটকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এবং কাশ্মীরে গ্রীষ্মকালীন পর্যটন মৌসুমে বুকিং বাতিলের ঘটনা বেড়ে যায়।
ওমর আবদুল্লাহ তাঁর বক্তৃতায় আরও বলেন, "সন্ত্রাসবাদ ও উগ্রপন্থা তখনই শেষ হবে যখন জনগণ আমাদের সমর্থন করবে।" তিনি জানান, জম্মু-কাশ্মীরে আইনশৃঙ্খলার দায়িত্ব রাজ্য সরকারের হাতে নেই, তবে তিনি এই সংকটকে রাজনৈতিক সুবিধার জন্য ব্যবহার করতে চান না। তিনি জনগণের প্রতি আহ্বান জানান, এই হামলা নিয়ে ভুল তথ্য ছড়ানো থেকে বিরত থাকতে।
পাহাড়গাম হামলার পর ভারত সরকার কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে। ১৯৬০ সালের সিন্ধু জল চুক্তি পাকিস্তানের সঙ্গে স্থগিত করার ঘোষণা দিয়েছে ভারত। এছাড়া, আটারি সীমান্ত পোস্টও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে ক্যাবিনেট কমিটি অন সিকিউরিটি (সিসিএস) এই হামলার পর পাঁচ দফা পদক্ষেপের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
জম্মু-কাশ্মীরে ২০১৯ সালে ৩৭০ ধারা বাতিলের পর থেকে রাজ্যের মর্যাদা হারিয়ে এটি একটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসেবে পরিচালিত হচ্ছে। ন্যাশনাল কনফারেন্সের নির্বাচনী ইশতেহারে ৩৭০ ধারা পুনর্বহাল এবং রাজ্যের মর্যাদা ফিরিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। তবে ওমর আবদুল্লাহ স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে তিনি এই সংকটকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করবেন না।
শ্রীনগরের ঝিলম নদীর তীরে একদল মহিলা এই হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছেন। স্থানীয়রা এই ঘটনার জন্য সন্ত্রাসীদের দায়ী করলেও, পর্যটন শিল্পের উপর এর প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।