নতুন করে বিতর্ক সৃষ্টি করেছে ভারত সরকারের সিদ্ধান্ত, যেখানে ফ্রান্স থেকে ৬৩০০০ কোটি টাকা খরচ করে ২৬টি রাফাল মেরিন জেট কেনা হচ্ছে। এই অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমানগুলি নৌবাহিনীর জাহাজ থেকে ওঠানামা করতে সক্ষম। তবে প্রশ্ন উঠেছে, এত বিশাল পরিমাণ অর্থ যদি দেশের গবেষণা ও উন্নয়নে বিনিয়োগ করা যেত, তাহলে দেশের নিজস্ব প্রযুক্তিতে কি উন্নত যুদ্ধবিমান তৈরি করা সম্ভব হত না?
দেশের আইআইটি, আইআইএসসি, টিআইএফআর, ও আইএসআই-এর মতো শীর্ষস্থানীয় গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলি ফান্ডিং সংকটে ভুগছে। মেধাবী বিজ্ঞানী ও ইঞ্জিনিয়াররা বাধ্য হচ্ছেন বিদেশে পাড়ি দিতে, কারণ দেশে গবেষণার সুযোগ সীমিত। একদিকে গবেষণার বাজেট কমানো হচ্ছে, অন্যদিকে বিদেশি প্রযুক্তি আমদানি করার জন্য কোটি কোটি টাকা খরচ করা হচ্ছে।
সমালোচকরা বলছেন, ২৬টি রাফালের জন্য ২০৩০ সাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হলে, সেই সময়ে দেশের ইঞ্জিনিয়ার ও বিজ্ঞানীদের দিয়ে কি একই প্রযুক্তির উন্নত যুদ্ধবিমান তৈরি করা যেত না? বিশেষজ্ঞদের মতে, যদি দেশের মেধার উপর বিনিয়োগ করা হত, তাহলে নিজেরাই ৫২টি ফাইটার জেট তৈরি করতে পারত ভারত। এর অর্ধেক নিজেদের ব্যবহারের জন্য রেখে, বাকি অর্ধেক বিক্রি করে লাভও অর্জন করা যেত।
অনেকে আরও প্রশ্ন তুলছেন, এই তাড়াহুড়োর আসল উদ্দেশ্য কী? যুদ্ধের আশঙ্কা নাকি রাজনৈতিক উদ্দেশ্য পূরণ? প্রতিরক্ষা কেনাকাটার সঙ্গে মধ্যস্বত্বভোগীদের লাভের যে অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরে শোনা যাচ্ছে, তা কি এখানেও প্রাসঙ্গিক?
“আত্মনির্ভর ভারত” গড়ার স্লোগান দেওয়া হলেও, মেধা ও প্রযুক্তি উন্নয়নে বিনিয়োগ না করে বিদেশি উপর নির্ভরতা বাড়ানো হচ্ছে। গবেষণার বাজেট বাড়িয়ে দেশীয় প্রতিভা ও প্রযুক্তির উপর আস্থা রাখাই কি প্রকৃত আত্মনির্ভরতার পথে এগিয়ে যাওয়া নয়?
এই প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজছে দেশ। দেশীয় মেধা ও প্রযুক্তির অবহেলা কি ভারতের ভবিষ্যতের জন্য ক্ষতিকারক হবে?