১৮ এপ্রিল, ২০২৫
আজ থেকে ২৯ বছর আগে, ১৯৯৬ সালের ১৮ এপ্রিল, দক্ষিণ লেবাননের কানায় জাতিসংঘের একটি আশ্রয় শিবিরে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় ১০৬ জন নিরীহ মানুষ নিহত হন। তাদের অর্ধেকই ছিল শিশু। ওই শিবিরে প্রায় ৮০০ লেবানিজ বেসামরিক লোক আশ্রয় নিয়েছিল, যারা ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে সংঘর্ষের কারণে গৃহহীন হয়ে পড়েছিল।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর গোলাবর্ষণে জাতিসংঘের স্পষ্টভাবে চিহ্নিত ওই আশ্রয়স্থল ধ্বংস হয়ে যায়। এ ঘটনায় চারজন ফিজি জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী গুরুতর আহত হন। জাতিসংঘ, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এবং হিউম্যান রাইটস ওয়াচের তদন্তে দেখা যায়, এই হামলাটি উদ্দেশ্যমূলক ছিল বা অন্ততপক্ষে অবহেলাজনিত, যা আন্তর্জাতিক মানবিক আইন লঙ্ঘন করেছে।
ইসরায়েল দাবি করেছিল, ওই গোলাবর্ষণ হিজবুল্লাহর মর্টার হামলার জবাবে ঘটেছিল। তবে জাতিসংঘের প্রমাণ এবং ঘটনাস্থলের ভিডিও ফুটেজে দেখা যায় যে হামলার আগে একটি ইসরায়েলি ড্রোন এলাকাটি পর্যবেক্ষণ করছিল। এতে প্রমাণিত হয় যে, হামলার পেছনে যথেষ্ট পরিকল্পনা ছিল।
এই হত্যাকাণ্ড আন্তর্জাতিক মহলে তীব্র নিন্দার জন্ম দেয়। আরব লীগ এই ঘটনাকে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস বলে অভিহিত করে। বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন একে যুদ্ধাপরাধ বলে আখ্যা দেয় এবং বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার আহ্বান জানায়।
কানার এই ঘটনাটি পরবর্তী দিনগুলোতে লেবানন-ইসরায়েল সংঘাতের এক কষ্টকর প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে। ২০০৬ সালের যুদ্ধসহ কানার মানুষ আবারও বহুবার সংঘাতের শিকার হয়েছে।
আজকের দিনটি সেই নিহত শিশু ও নিরীহ মানুষদের স্মরণ করার এবং যুদ্ধের ভয়াবহতাকে পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানায়। এখনও পর্যন্ত এই হত্যাকাণ্ডের জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে কোনো সুবিচার হয়নি, যা আন্তর্জাতিক আইনের বাস্তবায়নে বড় প্রশ্নচিহ্ন তুলে ধরে।