সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর শিক্ষকদের প্রতিবাদ তীব্র, স্বেচ্ছাশ্রমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান
কলকাতা: রাজ্যে শিক্ষকের চাকরি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের সাম্প্রতিক রায় নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে চাকরি হারানো প্রায় শতাধিক শিক্ষক প্রকাশ্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। হাইকোর্টের রায়ের পরে সুপ্রিম কোর্টে সমাধানের প্রত্যাশা নিয়ে অপেক্ষা করলেও, চূড়ান্ত রায়ে তারা হতাশ।
প্রতিবাদের মূল কারণ ও বিশ্লেষণ
-
যোগ্যতা নিয়ে অস্পষ্টতা:
সিবিআই-এর দেওয়া তথ্য অনুসারে অযোগ্য প্রার্থীদের চিহ্নিত করা সম্ভব হলেও, যোগ্য প্রার্থীদের ক্ষেত্রে কেন একই ভিত্তি প্রয়োগ করা হয়নি তা নিয়ে শিক্ষকরা প্রশ্ন তুলেছেন। শিক্ষকদের বক্তব্য, তাদের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কোনো অসংগতি ছিল না। -
দুর্নীতির জন্য দায়ী কে?
শিক্ষকদের দাবি, "রাজ্য সরকারের দুর্নীতির কারণে আমরা চাকরি হারিয়েছি।" তারা অভিযোগ করেছেন, সরকার দোষ স্বীকার না করে দায় শিক্ষকদের ওপর চাপিয়ে দিচ্ছে। -
স্বেচ্ছাসেবী শিক্ষকের প্রস্তাব:
রাজ্য সরকার প্রস্তাব করেছে, যতদিন না বিষয়টি পুনর্বিবেচনা হয়, ততদিন স্বেচ্ছাসেবী শিক্ষক হিসেবে কাজ করতে। শিক্ষকরা স্পষ্ট জানিয়েছেন, তারা বিনা বেতনে বা অনিশ্চিত বেতনে কাজ করতে রাজি নন।
প্রতিক্রিয়া ও আন্দোলনের পরিকল্পনা
-
প্রকাশ্য প্রতিবাদ:
"আমরা রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থার ভিত্তি। আমাদের সাথে এমন অবিচার করা হলে তার বিরুদ্ধে রাস্তায় নামতে আমরা বাধ্য হব," বলেছেন একজন প্রার্থী। -
ঋণের চাপ:
বহু শিক্ষকের ব্যাংক লোন ও পরিবারের দায় রয়েছে। এক শিক্ষকের কথায়, "আমাদের আয় বন্ধ হলে ব্যাংক আমাদের ফ্ল্যাট নিলামে তুলবে। সরকার কি তার দায় নেবে?" -
ভবিষ্যৎ কর্মসূচি:
শিক্ষকরা জানিয়েছেন, তারা আইনি পথে এবং বৃহত্তর জনমত গঠনের মাধ্যমে আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। "ভলেন্টিয়ারি কাজ নয়, আমরা পূর্ণ সন্মান এবং ন্যায্য বেতনে চাকরি চাই," তাদের সাফ বক্তব্য।
মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি ও বাস্তবতা
মুখ্যমন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছেন, যোগ্য প্রার্থীদের সসম্মানে পুনর্বহাল করবেন। কিন্তু শিক্ষকরা দাবি করছেন, মুখের প্রতিশ্রুতির চেয়ে তারা বাস্তব রূপায়ণ দেখতে চান।
বিশ্লেষণ:
এই রায় রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থায় গভীর সংকট সৃষ্টি করেছে। একদিকে সিস্টেমিক দুর্নীতি, অন্যদিকে চাকরি হারানো শিক্ষকদের অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ—এ দুয়ের মিলনে রাজ্যে শিক্ষা ও ন্যায়বিচারের প্রশ্ন আরও তীব্র হবে।