চাকরিহারাদের পেটে লাথি-কাণ্ডে তদন্তের নির্দেশ সিপি-র
কলকাতা: কসবার ডিআই অফিস চত্বরে আন্দোলনরত চাকরিহারা শিক্ষকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনায় তীব্র বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। বুধবার এই সংঘর্ষের সময় এক পুলিশকর্মীকে আন্দোলনকারীর পেটে লাথি মারতে দেখা যায়। সেই ছবি ও ভিডিও সংবাদমাধ্যম এবং সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে পুলিশ। পরিস্থিতি সামাল দিতে কলকাতা পুলিশ কমিশনার (সিপি) মনোজ ভর্মা ডিসি এসএসডি-কে এই ঘটনার পৃথক তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
ঘটনার বিবরণ:
কসবা ডিআই অফিসে চাকরিহারা শিক্ষকদের একটি দল তাঁদের দাবি আদায়ের জন্য শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছিলেন। তবে হঠাৎ পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। পুলিশ আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিচার্জ করে। এই সময় একজন পুলিশকর্মীকে এক চাকরিহারার পেটে লাথি মারতে দেখা যায়। এই দৃশ্য সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরায় ধরা পড়ে এবং দ্রুতই তা ভাইরাল হয়।
সিপি-র বক্তব্য:
ঘটনার বিষয়ে সিপি মনোজ ভর্মা বলেন:
-
"পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাচ্ছিল, তাই পরিস্থিতি সামাল দিতে লাঠিচার্জ করা হয়।"
-
"পেটে লাথি মারা কখনই সঠিক কাজ নয়। এটি অনুচিত এবং অগ্রহণযোগ্য।"
-
বিষয়টি সম্পূর্ণ খতিয়ে দেখতে ডিসি এসএসডি-কে পৃথকভাবে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
তদন্তের লক্ষ্য:
তদন্তের নির্দেশে সিপি স্পষ্ট করেছেন যে তিনি নিম্নলিখিত বিষয়গুলি জানতে চান:
-
কোন পুলিশকর্মী এই লাথি মারার জন্য দায়ী।
-
কোন অফিসারের নির্দেশে এই কাজ করা হয়েছে।
-
পুরো ঘটনার প্রেক্ষাপট এবং পরিস্থিতি।
পুলিশের সাফাই:
পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে যে আন্দোলনকারীরা প্রথমে পুলিশের উপর চড়াও হয়েছিলেন এবং সরকারি সম্পত্তি নষ্টের চেষ্টা করেছিলেন। তাদের দাবি, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য মৃদু লাঠিচার্জ করা হয়।
সমালোচনা ও প্রতিক্রিয়া:
পুলিশের এই আচরণকে মানবাধিকার লঙ্ঘনের নজির বলে অভিহিত করেছেন বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন। সাধারণ মানুষ এবং বিশিষ্টজনরা পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
পরবর্তী পদক্ষেপ:
-
সমস্ত ভিডিও ফুটেজ খতিয়ে দেখে তদন্ত রিপোর্ট জমা দেবেন ডিসি এসএসডি।
-
দায়ী পুলিশকর্মী এবং নির্দেশদাতা অফিসারের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
-
সিপি আশ্বাস দিয়েছেন, এমন ঘটনা পুনরাবৃত্তি রোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
এই ঘটনার জেরে পুলিশের কার্যপদ্ধতি নিয়ে জনমনে প্রশ্ন উঠেছে। চাকরিহারা শিক্ষকদের আন্দোলন মোকাবিলার ক্ষেত্রে পুলিশের অতি সক্রিয়তা এবং সংবেদনশীলতার অভাব প্রশাসনের প্রতি মানুষের আস্থা নষ্ট করতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।